রোববার মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাগ্য খুলবে ‘ফিনিশার’ নাসিরের!

0
2315

ক্রীড়া প্রতিবেদক, গড়াইনিউজ২৪.কম:: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গেল রাতে জেতা ম্যাচ হারার পর নাসির হোসেনের কথাই মনে পড়েছে অনেকের। ২৪ বছরের এই অল-রাউন্ডার ‘দ্য ফিনিশার’ নাম পেয়ে গিয়েছিলেন। কঠিন পরিস্থিতিতে খেলা শেষ করে আসার চমৎকার অভ্যাস তার। কিন্তু জাতীয় দলের সাথে থাকলেও একাদশে জায়গা মিলছে না অনেক দিন। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা মুঠো গলে বেরিয়ে যাওয়ায় আরো বেশি আলোচনায় নাসির।আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে ছিলেন। কিন্তু ড্রেসিং রুমেই বসে কেটেছে নাসিরের সময়। তার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বের আগে একটি মাত্র ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। বাকিটা সময় পর্যটক হয়ে থেকেছেন দলের সাথে। কিন্তু দুটি কারণে নাসিরকে এখন দরকার বলে মানছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ থেকেই শেষ ১০ ওভারে ভেঙে পড়ার রোগে আক্রান্ত টাইগার দল। শেষটা টেনে নিয়ে যেতে নাসিরের মতো কারো অভাব দেখা যাচ্ছে। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৭১ রান থেকে ২৮৮ রানে অল-আউট তো ফিনিশারের অভাবে হার। খেলা শেষ করে আসতে জানেন। ফিনিশার হিসেবে তাই বরাবরই সুনাম নাসিরের। দ্বিতীয়ত, ইংল্যান্ড দলে বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান আছেন কয়েকজন। তরুণ বেন ডাকেট, গেল ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বেন স্টোকস, মঈন আলি, অল-রাউন্ডার ডেভিড উইলিরা বাঁ হাতি। মাহমুদ উল্লাহ অফ স্পিনার। কিন্তু ৩ ওভারের বেশি বল করানো যায়নি তাকে দিয়ে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা নাসিরকে তার দলের কোটা পূরণ করা অফ স্পিনারই মানেন। নাসির শেষ খেলেছেন গত নভেম্বরে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ওই সিরিজে তার ৪ উইকেট। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ ম্যাচে ৪ উইকেট। তারো আগ ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচে ২ উইকেট। ১০ ওভার বল করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মূল্যবান ২ উইকেট নিয়েছিলেন।  রোববার মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আশা করছে, এই ম্যাচের মাধ্যমেই সিরিজে সমতা ফেরানো যাবে।
দ্বিতীয় ম্যাচে দুই দলের সদস্যদের নির্বাচন করা হবে এদের থেকে।

বাংলাদেশ স্কোয়াড : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাসির হোসেন, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, শফিউল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন রুবেল, আল আমিন হোসেন ও তাসকিন আহমেদ।
ইংল্যান্ড স্কোয়াড : জশ বাটলার (অধিনায়ক), মঈন আলী, জনি বেয়ারস্টো (উইকেটরক্ষক), জেক বল, স্যাম বিলিংস, লিয়াম ডসন, বেন ডাকেট, স্টিভেন ফিন, লিয়াম প্লানকেট, আদিল রশিদ, জেসন রয়, বেন স্টোকস, জেমস ভিন্স, ডেভিড উইলি ও ক্রিস ওয়াকস।

এখন কথা হলো, কার জায়গা নেবেন নাসির? আট বছর পর ফিরে আসা বাঁ হাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেনের কথাই বলা হচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়েছেন। অবশ্য ফেরার ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু দুই ম্যাচে রান ৪ ও অপরাজিত ৭। তাকে ব্যাটিংয়ে ৯ নম্বরে ছাড়া ভাবা যাচ্ছে না। কিন্তু নাসির জেনুইন ব্যাটসম্যান। তাই তাকে মোসাদ্দেক হোসেনের পর ৮ নম্বরে কিংবা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৭ নম্বরে পাঠানো যায়। যেমনটি একাদশে থাকলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে টিম ম্যানেজমেন্ট হয়ত ৭ নম্বরেই পাঠাতো তাকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনভিজ্ঞ মোসাদ্দেককে ওই কঠিন পরিস্থিতিতে পাঠানোর ঝুঁকি না নেওয়ার অপশন থাকতো। নাসির কোটা পূরণ করার মতো অফ স্পিনার। জেনুইন ব্যাটসম্যান। দলকে রক্ষা করার মতো রোমাঞ্চকর ফিল্ডার। দুই ক্যাচ ফেলার কাণ্ডও মোশাররফের বিরুদ্ধে এখন। নাসির বোলিংয়ে নিয়ন্ত্রিত, নিশানায় নিখুঁত। ইকোনমিতে কার্পণ্য আছে। ফিরলে প্রমাণের ও টিকে থাকার তাড়নাও থাকবে প্রবল। বরাবর লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করা নাসির ৫৬ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিতে ১,২৩১ রান করেছেন। ফিফট ৬টি। গড় ৩২.৩৯। স্ট্রাইক রেট ৮০.৬১। ৩৫ ইনিংসে বেশির ভাগ সময় অকেশনাল বোলার হিসেবে বল করেও ৪.৫৯ ইকোনমিতে ১৯ উইকেট নিয়েছেন। ২০১৬ ডাকা প্রিমিয়ার লিগেও অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে ভাস্বর ছিলেন। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১৬ ম্যাচে ৫২৮ রান করেছিলেন। গড় ৭৫.৪২। স্ট্রাইক রেট ৯৬.৮৮। ১৬ ম্যাচেই ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন। ৪.২৭ ইকোনমি। সিরিজে ফিরতে দ্বিতীয় ম্যাচ জিততেই হবে টাইগারদের। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, নাসিরের একাদশে ফেরা এই মুহূর্তে খুব জরুরি হয়ে উঠেছে।