ইউএনওর গাড়ির চাপায় সাংবাদিক নিহত!

0
333

ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি নিয়ে তার স্ত্রী ফিরছিলেন কর্মস্থল সিংড়ায়। পথিমধ্যে সেই গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহী সাংবাদিকের।
জানা যায়, ইউএনওর স্ত্রী সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করছেন। স্বামীর গাড়ি নিয়ে সিংড়া যাওয়ার পথে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নিংগইন তেল পাম্প এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সাংবাদিকের নাম মো. সোহেল রানা (৩৪)। তিনি পৌর শহরের বালুয়া বাসুয়া মহল্লার মৃত আ. জলিলের ছেলে। সোহেল রানা সিংড়া প্রেসক্লাবের সদস্য। তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া তিনি আগপাড়া শেরকোল বন্দর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। জানা যায়, নাটোরের সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মানসী দত্ত মৌমিতা নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকারের স্ত্রী। সোমবার সকালে ইউএনওর গাড়িতে কর্মস্থলে ফিরছিলেন তিনি। সিংড়া পৌঁছার আগে নিংগইন তেল পাম্প এলাকায় ওই গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে পিষ্ট হন মোটরসাইকেল আরোহী সাংবাদিক সোহেল রানা। স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। রাজশাহী নিয়ে গেলে দুপুর ১টার দিকে মারা যান। পরে ঘটনাস্থলে আসেন নলডাঙ্গার ইউএনও সুখময় সরকার। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আফজাল হোসেন, মো. সুলায়মান ও মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ইউএনওর গাড়ি দ্রুত গতিতে সিংড়ার দিকে আসছিল। নিংগইন পৌঁছালে মোটরসাইকেলে ধাক্কা গেলে চাকায় পিষ্ট হন সাংবাদিক সোহেল রানা। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কলেজে যান মানসী দত্ত মৌমিতা। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ি দুটি উদ্ধার করে। তবে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, নলডাঙ্গা ছোট উপজেলা, সেখানে পেট্রল সংকটের কারণে সিংড়ায় পেট্রল নিতে পাঠিয়েছি। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিক সোহেল রানাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল ইমরান। ইউএনও এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পরিবারকে সহযোগিতা করার কথা জানান তিনি। সাংবাদিক সোহেল রানা পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সহসভাপতি, কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে জড়িত আছেন।