কুষ্টিয়া জেলা কারাগার অনিয়ম ও মাদকের অভয়রন্য: যেন দেখার কেউ নেই!

0
1943

কুষ্টিয়া অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম::  “রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” স্লোগানে কুষ্টিয়া জেলা করাগারে নিরাপদে মাদক  ব্যবসা ও  বাঁধহীন অনিয়মের  বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। কারা কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সারাসরি তত্ত্বাবধানে  কারাভ্যন্তরে ইয়াবা, হেরোইন, ফেন্সিডিল ও গাঁজা  ক্রয় বিক্রয়ের মাধম্যে  মাদক সেবীদের  অভয়রন্য গড়ে উঠায় বার বার আলোচিত হলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল। কারাগার নামের সংশোধনাগারেই কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে অবাধে মাদক ক্রয় বিক্রয় ও মাদক সেবনের বিষয়টি বর্তমানে কুষ্টিয়ার আলোচিত বিষয় হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে আবাসিক হোটেলের মতো কারাভন্তরের  কাম পাশের নামে ১২ টি ওয়ার্ডে  কয়েদিদের সাথে চলছে বানিজ্য ও চাঁদা আদায়। প্রতি মাসের ৩ তারিখে নিলামের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডেও ম্যাড রাইটাররা হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি নিয়ে থাকে। কুষ্টিয়া কারাগারের বর্তমান জেলার তার নিজের তত্ত্ববধানেই কারারক্ষী দের দিয়ে কারাভন্তরে মাদক প্রবেশ ও সকল অনিয়ম পরিচালনা করছে বলে একাধীক সূত্র নিশ্চিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে বাইরের ক্যান্টিন  থেকে কারাভন্তরিন ক্যান্টিনের পন্য আনা নেওয়ার  অছিলায়  দিনের নির্ধারিত সময় সকাল ও বিকালে ইয়াবা,ফেন্সিডিল, হেরোইন , গাঁজা ও ঘুমের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। টাইগার ও স্পিডের বোতলে প্রবেশ করানো হচ্ছে ফেন্সিডিল। এইসব মাদক দ্রব্য ভেতরে পৌছে গেলে বিক্রির কাজটি করে থাকে  কেচ টেবিলের চিফ রাইটার যাবজ্জীবন সাজা ভোগকারী কয়েদি হাউজিং সি ব্লকের স্বাধীন ও সহযোগী হিসেবে কাজ করে অন্য এক যাবজ্জীবন সাজা ভোগকারী দৌলতপুরের শামসুদ্দিনের ছেলে আশাদুল। ক্যান্টিনেই অন্যান্য পন্যের  মত প্রকাশ্যে বিক্রি হয় নিরাপত্তাকর্মী ও কারা রক্ষীদের পাহারায়। নগদ টাকা , পিসি অথবা সিগারেটের বিনিময়ে এই মাদক দ্রব্য বিক্রি করা হয়ে থাকে।  ফেন্সিডিল ১৭০০ টাকা, ইয়াবা  এক পিচ ৭০০ টাকা , হেরোইন এক পাতা ৪০০ টাকা , গাঁজা এক পুড়ি ২০০ টাকা বা এক প্যাকেট লিফ সিগারেট। ঘুমোর ওষুধ হিসেবে প্রতি পিচ ট্রিপটিন ২০ টাকা, ডিসুপিন টু ৮০ টাকাসহ ভিন্ন ভিন্ মুল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। মাদক বিক্রির অর্ধেক টাকা প্রতিদিন সন্ধ্যায় জেলার মহিউদ্দিন বুঝে নেন এই দুই কয়েদির কাছ থেকে। এদিকে এ মাসের ৩ তারিখে কাম পাশের নামে ১২ টি ওয়ার্ডের ম্যাড,রাইটার ও সেবকদের  নিকট থেকে নেওয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। আমদানি ৬নং  ওয়ার্ডের চলতি মাসের জন্য ১০০০ টাকা ,৪ নং ওয়ার্ডে ৫০০০ টাকা , ২,৬,৩ নং ওয়ার্ডে ২০০০ টাকা ,৮,১০ ও ১২ নং ওয়ার্ডের  জন্য ১৫০০-১৮০০ টাকা  করে নিলামের মাধ্যমে জেলার  এই অর্থ গ্রহন করেছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক কারা কর্মকর্তা ও রক্ষীরা। ছাত্রাবাস ও আবাসিক হোটেলের মতোই জন প্রতি প্রত্যেক কয়েদি ও হাজতিকে মাসিক অর্থ পরিশোধ করেই কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে থাকতে হয় এমনটাই প্রচলিত নিয়ম হয়ে উঠেছে। সাক্ষাত কক্ষে কয়েদি ও হাজতিদের সাথে কথা বললে তারা জানায়,  কারাগারে কোন কিছুর অভাব নেই। শুধু টাকা থাকলেই সব পাওয়া যাবে। সংশোধন হওয়ার পরিবর্তে এখান থেকে মানুষেররা আরো বড় অপরাধী  ও মাদক সেবী হয়ে বের হচ্ছে। আমরা প্রতি মাসে টাকা দিয়ে থাকি নইলে নানা নির্জাতনের মধ্যে থাকতে হয়। শুধু মাদক ও ওয়ার্ড এবং কাম পাশ বানিজ্যেও মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় । এই জেলে সব কিছুই দুর্নীতিতে হাবুডুব খাচ্ছে, যেন দেখার কেউ নেই!