চাপ উপেক্ষা করে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির পাল্টাপাল্টি কমিটি

0
1104

গড়াইনিউজ২৪.কম:: কুষ্টিয়ায় পৌর বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছে নেতাকর্মীরা। শনিবার দুপুরে দুই গ্রুপের নেতারা পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা করেছে। এক গ্রুপ সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের বাসায় ও অপর অংশের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বসে কমিটি ঘোষণা করেন। দুই গ্রুপের ঘোষিত কমিটিতেই স্থান পেয়েছেন বিতর্কিত নেতারা। এনিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে কুষ্টিয়া পৌর টাউন হল ও ল’ কলেজ মিলনায়তনে পৃথক সম্মেলন আহ্বান করেন দুই গ্রুপের নেতারা। দুই স্থানের সম্মেলনেই প্রধান অতিথি করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে এবং বিশেষ অতিথি করা হয় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে। তবে পুলিশি বাধায় দুই জায়গার সম্মেলনই পণ্ড হয়ে যায়। পরে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের বাসায় বসে কমিটি ঘোষণা করেন এক গ্রুপের নেতারা। এই গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত হন ২৪ বছর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক নির্বচিত হন সাবেক কাউন্সিলর একে বিশ্বাস বাবু।

একই সময় শহরের এনএস রোডের জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বসে কমিটি ঘোষণা করেন অপর অংশের নেতারা। এই গ্রুপের সভাপতি হিসেবে জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাবেক জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক কাজল মজুমদারের নাম ঘোষণা করা হয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা জানান, জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ঠান্ডা লড়াইয়ের কারণে দুই স্থানে সম্মেলনের ঘোষণা দেয়া হয় এবং দুইটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ওই নেতার দাবি, কুতুব-বাবুর কমিটির পিছনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন ও মিলন-কাজল কমিটির পেছনে জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ আরজু বলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন একই দিনে চারটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে তড়িঘড়ি করে নিজের লোকদের দিয়ে পকেট কমিটি গঠনের পাঁয়তারা করতে থাকে। এ বিষয়ে আমরা জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। তারপরও কোন সমাধান না করে পকেট কমিটি গঠনের জন্য সম্মেলন আহ্বান করলে দলের পৌর কমিটির ত্যাগী নেতারা পাল্টা সম্মেলন করে কমিটি ঘোষণা করেছে। দলের ত্যাগী নেতাদের অভিযোগ, দীর্ঘ ২৪ বছর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল করে রেখেছেন কুতুব উদ্দিন আহমেদ। এক নেতার বাসায় বসে সেই কুতুব উদ্দিনকে এবার পৌর বিএনপির সভাপতি বানানো হয়েছে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে সুবিধাবাদীদের পদ দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলার এই দুই শীর্ষ নেতা। এদিকে অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্থান পাওয়া কাজল মজুমদরের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ। কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে কাজল মজুমদার দীর্ঘ ১২ বছর পলাতক রয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় পলাতক থাকা অবস্থায় পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে কাজল মজুমদারকে। জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামিম উল হাসান অপু বলেন, দলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। যারা নেতাদের চামচামি করতে পারে তাদেরকে পদ দেয়া হচ্ছে। সুবিধাবাদীদের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ত্যাগী নেতারা।