আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়: আমজাদ হোসেন রাজু

0
321
মোঃ আমজাদ হোসেন রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কুষ্টিয়া জেলা শাখা।

কুষ্টিয়া অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ (২৩ জুন)। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভ্রান্ত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা। অতঃপর বাঙালি জাতির উপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন, চরম অবেহলা ও দুঃশাসনে নিষ্পেষিত বাংলার জনগণের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতি-রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধুর সরকার স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে এগিয়ে নিতে নিবেদিত ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আন্তর্জাতিক শক্তির সহায়তায় ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাসহ জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ডেরর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র করা হয়। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নব উদ্যোমে সংগঠিত হয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের এক নবতর সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু এ দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারাও। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। ১৯৪৮ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সূচিত ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে গণজাগরণে পরিণত হয়। অব্যাহত রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার তরুণ সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়ে কারান্তরালে থেকেও ভাষা আন্দোলনে প্রেরণাদাতার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় অনেক অশ্রু, ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি ফিরে পায় ‘ভাত ও ভোটের অধিকার’; দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ও সুদক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সুশাসন, স্থিতিশীল অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নয়নে গতিশীলতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শুভ জন্মদিন ঐতিহাসিক ২৩ জুন অঙ্কুরিত হয়েছিল ‘স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নসূত্র’। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এমন একটি মহতী ক্ষণে উদযাপিত হচ্ছে যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার অনন্য প্রতীক পদ্মাসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আগামী ২৫ জুন সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা শত প্রতিকূলতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আজ মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য- দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
মোঃ আমজাদ হোসেন রাজু
সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কুষ্টিয়া জেলা শাখা।