এ বাজেট সম্পূর্ণ বাস্তবতা বর্জিত : ড. মঈন খান

0
313
ফাইল ছবি

ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশের কঠিন সময়ের প্রেক্ষিতে এই বাজেট সম্পূর্ণ বাস্তবতা বিবর্জিত। এই বাজেট জনগণের জন্য নয়, কেবলমাত্র সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের জন্যই এটা করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট সম্বন্ধে মতামত জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের নীতি-নির্ধারক ড. আব্দুল মঈন খান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিত্ব বিহীন এই সরকার দেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের কোভিড পরবর্তী চরম মূল্যস্ফীতি জনিত দুঃসহ জীবনযাপন ও দৈনন্দিন সংগ্রামের বিষয়টি সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে এমন একটি বাজেট উপস্থাপন করেছে। যা দেশের মুষ্টিমেয় শ্রেণির স্বার্থ রক্ষায় তৎপর হয়েছে। অবাক হবার কিছু নেই, এতে করে লাভবান হবে সরকার সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষ গোষ্ঠী। অন্যদিকে নতুন বাজেটের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আরও চরম অবস্থায় পতিত হবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

মঈন খান বলেন, বাজেটের আকার বেড়েছে সন্দেহ নেই, কিন্ত এই বাজেটের যে দিকটি সরাসরি দেখা যায় না সেটা হচ্ছে, অবাধ মুদ্রা সরবরাহের বিষয়টি। কেউ জানে না, বাংলাদেশ ব্যাংক কত নতুন নতুন নোট ছাপিয়ে বাজার ছয়লাব করে দিচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর অর্থনীতিতে জনগণের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ইনফ্লেশন সরকারি হিসেবে ৬ শতাংশ এর কিছু ওপরে কিন্তু বাস্তবে সেটা ১২ শতাংশ, অর্থাৎ সরকারি হিসেবের দ্বিগুণ। বর্তমান বছরের বাজেটের ফলে এই পরিস্থিতি আরও নাজুক আকার ধারণ করবে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে হয়, ডলারের বিপরীতে স্বল্পতম সময়ে টাকার মারাত্মক অবমূল্যায়ন ও দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। এই বাজেটে তার কোন সমাধান নেই। বাজেট ঘাটতি বিষয়টি লক্ষ্য করুন। ৩৬%, অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশেরও বেশী। ফলে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিষয়টি নাইবা ব্যাখ্যা করলাম। এর চাপও কিন্তু দরিদ্র জনগণের ওপরেই পড়বে। তিনি বলেন, দরিদ্র দেশের একটি বাজেটের মৌলিক দিক হল উন্নয়ন বাজেট বনাম রাজস্ব বাজেটের অনুপাত। আমরা দেখছি, একদিকে উন্নয়ন বাজেটের সিংহ ভাগ নিয়েছে ভৌত অবকাঠামোর মেগা প্রজেক্টগুলো। সাথে সাথে আশংকা হচ্ছে মেগা দুর্নীতির। কাজেই অধিকতর ব্যাখ্যায় না যাওয়াই হয়তো উত্তম। পাশাপাশি অনুন্নয়ন ব্যয় অথবা এখন যাকে অন্য নামে বলা হয় পরিচালনা ব্যয়, তার পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটির ওপর। রাজনৈতিক সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রশাসন ও সাপোর্ট সিস্টেমকে খুশি রাখতে হবে তো! মঈন খান বলেন, বাজেটে বিরাট অংকের ভর্তুকি। লক্ষ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কার পকেটে যায়? আমরা অতীতে দেখেছি, কিভাবে একই টেলিফোন নাম্বারে কতবার প্রণোদনা যায়, কার কাছে যায়! এগুলো এখন মানুষের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন আসবে, বিগত দুই বছরে যে লক্ষ হাজার কোটি টাকার ওপরে প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল সে টাকা গেল কই? তার মধ্যে একটি টাকাও কি পরিশোধ করা  হয়েছে? জনগণ জানতে চায়। শুনি, রফতানি না কি হু হু করে বাড়ছে। তাহলে প্রণোদনার টাকা পরিশোধ হচ্ছে না কেন? কারা কারা এই প্রণোদনা পেয়েছে ও কি পরিমাণ পরিশোধ করেছে, তার ওপরে সরকারের শ্বেতপত্র চায় জনগণ।