কুষ্টিয়ায় পুত্রবধূর হাতে শ্বাশুড়ি হত্যার অভিযোগ!

0
363

কুষ্টিয়া অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: কুষ্টিয়া শহরের উপজেলা রোডের মাঠপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বৌমা মুসলি (৩২) কর্তৃক শাশুড়ি রেনু বেগম (৬০) কে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঘটনা সুত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে নিহত রেনু বেগমের ছোট ছেলে সোহেল রানার স্ত্রী মুসলি তার শাশুড়ির নিজ নামীয় জমি তার নামে লিখে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে রেনু বেগম অস্বীকৃতি জানালে তার পঙ্গু ছেলেকে গলা টিপে ধরে মারধর শুরু করে বৌমা মুসলি। তখন পঙ্গু ছেলেকে বাঁচাতে তার মা রেনু বেগম এগিয়ে আসলে তার গলা টিপে ধরে বৌমা মুসলি। তখন বাইরে থেকে এক প্রতিবেশী মহিলা চিতকার শুনে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে দেখে বৌমা মুসলি তার রোজাদার শাশুড়ির চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালের‌ সাথে মাথা গুঁতা মারছে। এই দেখে তিনি রেনু বেগমের মেয়ে রানীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে আসে। তখন প্রতিবেশী ঐ মহিলা ও রানী মিলে আহত রেনু বেগমকে মুসলির হাত থেকে রক্ষা করে। ততক্ষণে আহত রেনু জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। ঐ অবস্থায় রেনু বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রেনু বেগমের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাৎকারে উপস্থিত এলাকাবাসীদের একাংশের সামনে প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী মহিলা (৬০) এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। স্থানীয়রা জানান, কুষ্টিয়া পৌর এলাকার ১৯ নং ওয়ার্ডের উপজেলা মাঠপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল খালেক ড্রাইভারের স্ত্রী রেনু খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর রেনু খাতুন তার সন্তানদের নিয়ে মাঠপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। বড় ছেলে মাসুদ কুষ্টিয়াতে একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন ও ছোট ছেলে সোহেল রানা দীর্ঘ ১২বছর প্রবাসে ছিলেন। হঠাৎ প্রবাসে থাকাকালীন স্ট্রোক জনিত কারণে গত ৭/৮ মাস আগে পঙ্গুত্ব বরণ করলে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সোহেল রানা পঙ্গু অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। একমাত্র মেয়ে রানীকে বাড়ির পাশেই স্বামীকে নিয়ে অন্য বাড়িতে বসবাস করেন।নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোহেল রানা প্রবাসে থাকাকালীন পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি করার জন্য তার স্ত্রী মুসলির কাছে আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা পাঠান। তবে মুসলি বাড়ি নির্মাণ করতে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন। সোহেল রানা পঙ্গুত্ব বরণ করে দেশে ফিরে আসার পর তার স্ত্রীর কাছে জিম্মি হয়ে যান। সোহেল রানার পঙ্গুত্ব ও নিস্তব্ধতাকে পুঁজি করে তার স্ত্রী জমির মালিকানা নিজ নামে নিয়ে বিক্রয় করার জন্য প্রায়ই শাশুড়ির উপর অত্যাচার শুরু করে। ঘটনার দিনও সোহেল রানার স্ত্রী তার শাশুড়ির উপর শারীরিক নির্যাতন করে। নিহতের পরিবারের এক সদস্য প্রতিবেদককে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, যেহেতু এটা আমাদের পারিবারিক বিষয় তাই পারিবারিকভাবেই সমাধানের চেষ্টা চলছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলমের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, চিকিৎসকরা ধারণা করছেন স্ট্রোক জনিত কারণে মহিলার মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মূল বিষয়টি জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত রেনু বেগমের বৌমাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।