‘কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ না করার অনুরোধ পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম

0
3187

ঢাকা অফিস: গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কথা না বলে ‘কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল এক অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, হাসনাত রেজা করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্তকারী সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা না বলে এবং রেফারেন্স ছাড়া ‘কথিত অনুসন্ধানের’ নামে সংবাদ প্রকাশ হলে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থেকে যায়। তদন্তকারী কর্মকর্তা যে স্বাধীনভাবে তদন্ত করছে, তা বিঘিœত হতে পারে। তিনি মানসিক চাপ অনুভব করতে পারেন। এতে তদন্তকাজ বিঘিœত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কাজেই সবাইকে অনুরোধ করব তদন্তকারী কর্মকর্তা বা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা না করে এ ধরনের ‘কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন। পাশাপাশি যদি কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে, সেক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা বা সংস্থায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে নেবেন। হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব ঘটনার শিকার নাকি তারা সরাসরি জড়িত, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা রিমান্ডে আছে। রিমান্ড শেষে এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে জানাতে পারব। তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য। কী পরিস্থিতিতে বা কেন তাদের হাতে অস্ত্র ছিল, কোন পরিস্থিতিতে তাদের শারীরিক ভাষা কেমন ছিলÑ এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষেই বলা যাবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া সম্ভব হবে না। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হলে তাদের সম্পৃক্ততা থাকা বা না থাকার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানানো যাবে না। তা ছাড়া মামলাসংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের কাছে রয়েছে কিনা তা জানার জন্য সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যদি প্রতীয়মান হয় এই মামলার সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত, সুনির্দিষ্ট কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়, সেেেত্র এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে। সেটিও জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হলে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার নেই। তবে অনেককেই এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেসব পুলিশ সদস্য প্রথম তথ্য পেয়ে হলি আর্টিজানে গিয়েছিল, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে এমন অসংখ্য মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যারা সাী হতে পারেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা যাদের মনে করবেন, তাদের মামলায় সাী করা হবে। এ মামলার তদন্তের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তদন্তে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। কারা জড়িত, কারা জড়িত নয়, কার কোন ধরনের ভূমিকা রয়েছেÑ এ সংক্রান্ত অনেক তথ্যই রয়েছে আমাদের হাতে। এখন পর্যন্ত তদন্ত শেষ হয়নি, গ্রেপ্তার অভিযানও শেষ হয়নি। কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য আপনাদের কাছে প্রকাশ করা যাবে। আর্টিজানের ছাদে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিবের সঙ্গে জঙ্গির ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনেক কিছুই সম্ভব। যদি এ ধরনের ছবি কারো কাছে থাকে, যদি তদন্তকাজে সহায়তা করতে চান, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তা তদন্তকারী সংস্থার কাছে আপনারা সরবরাহ করবেন। এ ধরনের অনেক ছবিই পেয়েছি। এগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গুলশানে হামলাকারীদের অর্থদাতা ও অস্ত্র সরবরাহকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থায়ন, অস্ত্রের সম্ভাব্য সরবরাহকারী, প্রশিকÑ এ ধরনের অনেক তথ্যই আমাদের হাতে এসেছে। তবে এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা গেলে এ বিষয়ে আপনাদের জানানো যাবে। জঙ্গিদের দুই হোতা মেজর জিয়াউল হক ও তামিম চৌধুরীর বিষয়ে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিষয়ে কেউ কেউ খবর দিচ্ছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি নেই।