কুষ্টিয়ায় মেডিকেল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ট্রাফিক পরিদর্শক কারাগারে

0
1867

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:: কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজছাত্রীর দায়ের করা পর্ণোগ্রাফি মামলায় ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শককে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামি মো. মোমিনুল ইসলামকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কুষ্টিয়ার কোর্ট পুলিশ পরির্দশক রতন শেখ জানান, আসামি মোমিনুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ট্রাফিক পুলিশের টিআই-টু হিসেবে সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন। আদালত সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের এক ছাত্রীর দূর সম্পর্কের চাচা মোমিনুল ইসলাম। ২০১২ সালে ওই ছাত্রী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় আসামি মোমিনুল ইসলাম কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পূর্ব পরিচিত এবং দূর সম্পর্কের আত্মীয় হওয়ার সুবাদে আসামি মোমিনুল প্রায়ই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে যাওয়া আসা করত। ২০১২ সালের ৬ জুন আসামি মোমিনুল ওই ছাত্রীকে কুষ্টিয়া শহরের একটি আবাসিক হোটেল কাম রেষ্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে কোমল পানীয় কোকের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে তাকে অচেতন করে অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। পরে ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকেন মোমিনুল। যদিও তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে।

ওই ছাত্রী বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে সে। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে ওই ছাত্রীর বিয়ে হয় পাবনা বিদ্যুৎ বিভাগের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর সঙ্গে। এ খবর জানতে পেরে আসামি মোমিনুল ধারণকৃত এসব অশ্লীল ছবি মোবাইলে ওই ছাত্রীর মা-বাবা, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং স্বামীর বন্ধু-বান্ধবের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে তার স্বামী ডিভোর্স দেয়। পরে ওই ছাত্রী গত ১৯ এপ্রিল কুষ্টিয়া মডেল থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষ আইনের ২০০৬ এর ৫৭/২ ধারায় মোমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় মোমিনুল ইসলাম উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। গত ২৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামি মোমিনুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।