ওদেরকে কেন গুলি করে মারা হচ্ছে: খালেদা

0
1050

গড়াইনিউজ২৪.কম:: কিছুদিন পরপর জঙ্গিবাদের ধোঁয়া তুলে সরকার কিছু মানুষকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ তাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কাছে ধরা থাকে। কিছুদিন পর দাঁড়ি, চুল বড় হয় পরে তাদের সামনে নিয়ে আসে। বলা হয় এরা জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ। এরা মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু পরে তাদের কাছ কি তথ্য পাওয়া যায় তা প্রকাশ করা যায় না।’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ৩৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র না থাকায় জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন বেশ কিছু জঙ্গি নিহত হয়েছে। গত ২৬ জুলাই ও ২৭ আগস্ট রাজধানীর কল্যাণপুর ও নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিদের দুটি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নয়জনকে হত্যা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিহতদের মধ্যে একজন সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার নাটের গুরু হিসেবে চিহ্নিত তামিম চৌধুরীও আছেন। পাইকপাড়া অভিযানের পরই এই অভিযানকে নাটক বলেছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার এই অবস্থানের সমালোচনা করে প্রশ্ন তোলেন, খালেদা জিয়াই জঙ্গিদের মদতদাতা কি না। বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনায় খালেদা জিয়া আবারও জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের প্রাণহানি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, ‘ওদেরকে গুলি করে মারা হচ্ছে কেন? দেশে আইন আছে, আদালত আছে। এর কারণ কি? এর পেছনে নিশ্চয়ই গোপন রহস্য আছে।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে সভাপতিত্ব করেন। দলের স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য শুরুর আগে খালেদা জিয়া বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, টুইটার, ব্লগের উদ্বোধন করেন। বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানস্থলে আসার পর নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে সবাই সম্মান জানান। এবং করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়। এদিকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সকালে শেরে বাংলানগরে অবস্থিত দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। আলোচনা সভায় যোগ দিতে দুপুর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলসহ অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। নানান রঙ বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নেতাকর্মীদের আলোচনা সভায় যোগ দেন। বক্তব্যের শুরুতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূয়সী প্রশংসা করেন খালেদা জিয়া। বলেন, গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা কর ও বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করছেন। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের আরেকটি অঙ্গ সংগঠন। জনপ্রশাসনের সব জায়গায় দলীয়করণ করা হয়েছে। বহু কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে, বহু লোককে বিদায় করে দেয়া হয়েছে।’ নেতাকর্মীদের ধৈর‌্য ধরে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অরাজকতা বিশৃঙ্খলা নয়, যেভাবে নির্দেশ দেয়া হবে সেইভাবে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করলে অবশ্যই সুদিন আসবে।’