বর্ষায় কোথায় বেড়াতে যাবেন?

0
1821
সম্পাদকীয় কলাম।

আতিকুজ্জামান ছন্দ:: বর্ষায় প্রকৃতি পেখম মেলে। সবুজ অরণ্য সবুজ ফিরে পায় যৌবন। গ্রাম-বাংলার সৌন্দর্য বাড়তি মাত্রা পায়। বর্ষায় পাহাড়-পবর্ত আর হাওর-বাওরে ঘুরে বেড়ানোর এই তো সময়। বেড়িয়ে আসুন বাংলার আনাচ কানাচ থেকে।

বিছনাকান্দি: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় ভারত সীমান্ত ঘেঁষে অপরূপ এই জায়গার অবস্থান৷ বর্ষা মৌসুমেই মেঘালয়ের পাহাড়ি ঝরনাধারা প্রবল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিছানাকান্দির পাথরের বিছানার ওপর৷ এ জায়গাটিতেও ভ্রমণের আদর্শ সময় তাই বর্ষাকাল৷

সুন্দরবন: বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি জায়গা জুড়ে সুন্দরবনের অবস্থান৷ ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় সুন্দরবন স্থান পায় ১৯৯৭ সালে৷ রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ নানান বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এ শ্বাসমূলীয় বন৷ বর্ষায় এই বন তার সবটুকু মেলে ধরে৷ এ সময়ে বন্যপ্রাণীও দেখা যায় প্রচুর৷

ভাসমান পেয়ারা বাজার: দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠি জেলার কীর্তিপাশা খালে বর্ষা মৌসুমে বসে শতবর্ষী পুরনো ভাসমান বাজার৷ চোখ জুড়ানো এই বাজারটির সৌন্দর্য বর্ষায় পর্যটকদের মুগ্ধ করে৷ এ অঞ্চলে প্রচুর পেয়ারার চাষাবাদ হয় বলে এ বাজারের প্রধান পণ্য পেয়ারা৷ এছাড়া অন্যান্য মৌসুমী ফল ও শাক সবজিও বিক্রি হয় এ বাজারে৷

টাঙ্গুয়ার হাওর: সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান৷ শীতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ হাওরের পানি কমে গেলেও বর্ষা মৌসুমে কানায় কানায় ভরে যায়৷ এ সময় জায়গাটির সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহুগুণ৷

শ্রীমঙ্গলের চা বাগান: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা বাগান মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে৷ বর্ষা মৌসুমেই চা বাগানগুলোতে কর্ম চাঞ্চল্য থাকে, বাগানগুলোও থাকে বেশি সবুজ, সতেজ৷ চা বাগানে ভ্রমণের উপযুক্ত সময় তাই বর্ষাকাল।

রাতারগুল জলাবন: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত এই জলাবন৷ এটি বছরের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সময় পানিতে নিমজ্জিত থকে৷ শুধুমাত্র বর্ষা ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে পুরো জঙ্গল ডুবে থাকে পানিতে৷ রাতারগুলের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে তাই যেতে হবে বর্ষায়৷

পান্তুমাই ঝর্ণা: গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন নদীর জলধারা আসে মূলত ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে৷ মেঘালয়ের পাহাড়ের এমনই একটি ঝর্ণা আছে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পান্তুমাই গ্রাম ঘেঁষে৷ আর এ ঝর্ণার আসল রূপ দেখা যায় কেবল বর্ষা মৌসুমে৷

চলনবিল: বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিলের নাম চলনবিল৷ নাটোর, সিরাজগঞ্জ আর পাবনা – এই তিন জেলা জুড়ে এর বিস্তৃতি৷ শুকনো মৌসুমে এ সব বিলে পানি থাকে না৷ তবে বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর হয়ে রূপের পসরা সাজিয়ে বসে এই বিল৷ হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের দুই পাশে বর্ষা মৌসুমে বিলটি যেন সমুদ্রে রূপ নেয়৷

নীলক্ষা বিল: নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা অবস্থিত এ বিল৷ বর্ষা মৌসুমে এ বিল রূপের পসরা সাজিয়ে বসে৷ এর স্বচ্ছ পানিতে ছোট নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যায়৷ ঢাকা থেকে কেউ চাইলে দিনে দিনেই ঘুরে আসতে পারবেন৷

আড়িয়াল বিল: এ বিলটি ঢাকার পাশেই, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে৷ প্রায় ১,৬৬,০০০ একর বিস্তৃত মনোমুগ্ধকর এ বিলে বর্ষাকালে নৌকায় ঘুরে বেড়ালেই মন ভালো যাবে৷ শুকনো মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে এ বিল রূপ নেয় বিস্তীর্ণ শষ্যখেতে৷