কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের

0
2350

কুষ্টিয়া অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: বিএনপিকে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিএনপিকে নিয়ে ভাববেন না। তাদের কর্মসূচি হলো নালিশ করা। যাদের নিজের দেশের জনগণের প্রতি আস্থা নেই, তারা বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে। এ কারণে ভারতের নির্বাচনে মোদি জয়লাভ করার পরদিন ভারতীয় দূতাবাসের দরজা খোলার আগে বিএনপির শতশত নেতা মিষ্টি ও ফুল নিয়ে দরজার সামনে হাজির হয়ে যান। দিল্লির মসনদে মোদি, আর ঢাকায় বসে বিএনপি নৃত্য করে। এবার আমেরিকার নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গেলো- হিলারি জিতে গেল, হিলারি জিতে গেল। ঢাকায় মণকে মণ মিষ্টি রেডি ছিল। তবে এবারো হতাশ হতে হলো বিএনপিকে। তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কুষ্টিয়া এসে দেখে যান, জনগণ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনার শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। তাই শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। তিনি বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা প্রগতি ও উন্নয়নের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আর খালেদা জিয়া দেশে জঙ্গিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জঙ্গী দমনে শেখ হাসিনা বিশ্বের রোল মডেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও তার জঙ্গিদমন পদ্ধতি অবলম্বন করে শুধু বাংলাদেশে নয়, বৈশ্বিক সন্ত্রাসাবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব হবে। দেশের মানুষ আজকে বুঝতে পেরেছে, উন্নয়নের জননী শেখ হাসিনা। জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ। আর তাই ¯েøাগান হওয়া উচিৎ বারবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার। আরেকবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেকটাই ¯^য়ংসম্পুর্ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠছে। পদ্মাসেতু নিজেদের অর্থায়নে করা হচ্ছে এবং কর্নফুলী টানেলও হবে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে মানুষ, ডিজিটাল সেবা চলে গেছে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, সেখানে বিদ্যূৎ বিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের সেবা দেওয়া হচ্ছে। রাস্তা ঘাট আর আগের মতো নেই। আমুল পরিবর্তন হচ্ছে। আর এসব কেবল সম্ভব হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের কারনে। হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে কেউ ‘বসন্তের কোকিল’এর মতো এসে ঠাঁই পাবে না উল্লেখ করে আওয়ামীলীগের এই নেতা আরও বলেন, দলের অভ্যন্তরে কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো দ্রুত সমাধান করে নেত্রীর নির্দেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে কোনো হাইব্রিড নেতা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করতে পারবে না।” তাই আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে এই কুষ্টিয়াসহ খুলনা বিভাগের ৩৭টি আসনেরই আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিজয়ী দেখতে চাই। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী মির্জা আযম এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কুষ্টিয়ার উন্নয়নের রুপকার মাহবুব উল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওদেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, পৌর মেয়র আনোয়ার আলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কুষ্টিয়ার উন্নয়নের রুপকার মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শক্ত ঘাটি হচ্ছে এই কুষ্টিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেছেন এই কুষ্টিয়ার মানুষ কিভাবে আওয়ামীলীগকে ভালোবাসে। আজ দলের সাধারন সম্পাদক নিজের চোখে দিখছেন এতো মানুষ এই দলকে ভালোবাসে বলেই এখানে এসেছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ শুধু কুষ্টিয়ার রাজনীতি সুসংগঠিত করেনি। সারা বাংলাদেশের আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করেছে। যার কারনে আমরা তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্বনন্দিত মানুষ হিসেবে সারাবিশ্বের মানুষ বলতে শুরু করেছে। এবং এত দ্রুত কিভাবে এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেসব নিয়েও বিশ্লেষণ করছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ওবায়দুল কাদেরের হাতে ফুল ও একটি সম্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেন। এসময় কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া- (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারন সম্পাদক আমজাদ আলী খানসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ ছাড়া পাশ্ববর্তী জেলার আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরআগে দুপুরে দলটির সাধারন সম্পাদক কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে পৌছালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ব্যাপারে সরকার খুব কঠোর। এ ঘটনার সাথে জড়িত মন্ত্রী, এমপি দলীয় নেতা যেই হোক না কেন তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আগে দেখা হবে তার অপরাধটা কি? মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি কারফিউ গণতন্ত্রের ভেতর দিয়ে ¶মতায় এসেছিল। সুতরাং তাদের দলের ভেতরই গণতন্ত্র নেই, তারা মিথ্যাচারের উপর ভর করে এখন রাজনীতি করছে। তারা সহিংসতার পথ বেছে নিয়ে গণতন্ত্রের সাথে তামাশা করছে।