নিজের রক্তেই ভিজল মিমের পরীক্ষার কলম-পেন্সিল

0
936

গড়াইনিউজ২৪.কম:: যে কলম দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে এলো মেয়েটি, সে কি জানতো কিছুক্ষণ পরই নিজেরই রক্তে রঞ্জিত হবে সেই কলম? এই কলমই তাকে জীবনের পরীক্ষাতে উৎরাতে পারতো, কিন্তু পলকেই এক ঘাতক কেড়ে নিয়েছে তার আস্ত জীবনটাই। পরীক্ষা দিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে মা-বাবার কাছে যেতে পারলো না আর মেয়েটি। ফুটে ওঠার বয়সে রাস্তাতেই ঝরে গেল তার অঙ্কুরিত জীবন। গোটা শরীরটাই তার দুমড়ে মুচড়ে পিষে দিয়ে গেছে ঘাতক কাভার্ডভ্যান। ফারহানা আক্তার মিম। বয়স একুশের মেয়েটি টঙ্গীর শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী। শনিবার দুপুরে কলেজে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পারাপারের সময় বড়বাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি দ্রুতগতির কাভার্ডভ্যান মেয়েটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সকালে যে মেয়েটি বাড়ি থেকে গেল জলজ্যন্ত, বিকালে বাড়ি ফিরেছে ঠিকই, তবে নিথর নিস্তব্ধ প্রাণহীন শরীর নিয়ে। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা প্রাণ কেড়ে নেয়া ঘাতক কাভার্ডভ্যানটির চালকের সহকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে৷ পরে তারা গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।নিহত মিম গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাহপুর থানার কদুরিয়া গ্রামের ফারুক হোসেনের মেয়ে। তিনি টঙ্গীর বড়বাড়ি বগারটেক এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, সড়কে যত মানুষ মারা যায়, তাদের ৪২ শতাংশই প্রাণ হারায় রাস্তা পারপারের সময়। বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে পারাপারের জন্য ফুটওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস থাকলেও টঙ্গীর দুর্ঘটনাস্থলের এলাকাটিতে তেমন কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফলে সেখানে দ্রুতগামী যানের মাঝে একপ্রকার দৌঁড়েই রাস্তা পার হতে হয় পথচারীদের। এর আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার মগবাজারে বাসচাপায় একজন মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া্রও একই দিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিহত হয়েছে আরও ১১ জন।