সিটিং সার্ভিস ফের চালু ভাড়া আদায় ইচ্ছেমতো

0
1112

ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: রাজধানীতে চারদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীতে পুরোদমে চালু হয়েছে গণপরিবহনে সিটিং সার্ভিস। আইনি বৈধতা না থাকা এ সার্ভিস গতকালও বিআরটিএ’র ঘোষণা অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায় করেনি। নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া নিয়েছে যাত্রীদের কাছ থেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তিনগুণ পর্যন্ত নিয়েছে। আবার কোনো কোনো পরিবহনে বন্ধ করা হয়েছে হাফ পাস। বিআরটিএ’র বুধবারের ঘোষণার পর গতকাল সকাল থেকে রাজধানীতে ফের চালু হয় সিটিং সার্ভিস। প্রথম দিনে বিভিন্ন বাসে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি, কথা কাটাকাটি হয়েছে। তারপরও ফের ঢাকার পথে ‘সিটিং সার্ভিস’ পেয়ে নিয়মিত এ সার্ভিস ব্যবহারকারীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। এদিকে বিআরটিএ’র পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল কার্যক্রম চালালেও গণপরিবহনে অভিযান করেনি। বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গণপরিবহনে একটি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার  লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছিল নমনীয়।গতকাল সরেজমিনে পরির্দশনকালে দেখা যায়, রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল, গুলিস্তান-গাবতলী, বনশ্রী, মাওয়া, পোস্তগোলা, মোহাম্মদপুর, সাভার, সায়েদাবাদ, আজিমপুর, সদরঘাট, সায়েদাবাদ, সাইনবোর্ড রুটে চলাচলকারী প্রায় সব বাসই চলেছে সিটিং সার্ভিস হিসেবে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী প্রথম ৩ কিলোমিটারের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা। তবে এসব বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া আদায় করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত। বাংলামোটর থেকে মালিবাগ আবুল হোটেলের দূরত্ব ২ দশমিক ৬ কিলোমিটার। মোহাম্মদপুরের বসিলা-ডেমরা রুটের স্বাধীন পরিবহনের বাসে এই দূরত্বের জন্য ভাড়া নেয় ১০ টাকা। এই ভাড়ায় একজন যাত্রীর প্রায় ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। একই অবস্থা সায়েদাবাদ থেকে গাজীপুরগামী বলাকা পরিবহনের বাসে। এই বাসে মহাখালী থেকে মগবাজার আসতে তারা ভাড়া নেয় ২০ টাকা। কেন বিআরটিএ’র নির্দেশ অমান্য করে আবারো অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বলাকা পরিবহনের এক কন্ডাক্টর জানান, আমরা কাছের যাত্রী তুলতে চাই না। তুললে সিট পূরণ দেখানোর জন্য ২০ টাকা নেই। এই নিয়মের কারণে যারা দূরে যাবে তাদের জন্য লাভ হয়। ২০ টাকা দিয়ে ওই যাত্রী মগবাজারে নামলেও একই ভাড়ায় তিনি কমলাপুর পর্যন্ত যেতে পারবেন। বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, মূলত সিটিং সার্ভিসকে আইনি বৈধতা দেওয়ার জন্য পরিবহন মালিকরা গত কিছুদিন পরিবহন সেক্টরে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। বাস বন্ধ রেখে আমাদের কষ্ট দিয়ে তারা আবারো তা চালু করেছেন। বোঝা গেল—বাস মালিকরা চাইলে সবই পারেন। তবে ভাড়া ও সিটিং সার্ভিস বিষয়ে স্থায়ী সমাধান আশা করছেন যাত্রীরা।ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান সম্পর্কে বিআরটিএ’র পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) নাজমুল আহসান মজুমদার বলেন, মিরপুর কার্যালয়ে অভিযানে ৫ দালালকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে ৫৬টি। ভ্রাম্যমাণ আদালত ঢাকা-মাওয়া সড়কে ২৫টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের অবৈধ বাম্পার ও অ্যাঙ্গেল অপসারণ করেছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকালে বিআরটিএ ও বাস মালিকরা জরুরি বৈঠকে বসে আগামী ১৫ দিন ‘কথিত সিটিং সার্ভিস’ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের নির্দেশও দেওয়া হয় ওই বৈঠক থেকে।