গড়াইনিউজ২৪.কম:: আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে অন্তত আট কিলোমিটার দূরে গরুর হাটগুলি সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বি এস এফ বলছে ২০০৩ সালে জারী করা ওই নির্দেশনামাই উদ্ধৃত করে তারা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে যে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের আট কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ছয়টি গরুর হাট এখনও চলছে। তবে সীমান্ত অঞ্চলের প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী বলছেন গরুর হাট সরিয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা বি এস এফেরই নির্ধারণ করার কথা ছিল। তারাই সেই কাজ করে উঠতে পারে নি এত বছরেও। বি এস এফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলের ইন্সপেক্টর জেনারেল সন্দীপ সালুঙ্কে জানিয়েছেন, “গত বছর অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে তিনটে চিঠি দিয়ে ওই গরুর হাটগুলো সরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছি আমি। এই হাটগুলো সীমান্ত থেকে অন্তত আট কিলোমিটার দূরে না সরালে পাচার রোখার কাজ আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।“ বি এস এফ বলছে যে ছয়টি হাট সীমান্তের আট কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এখনও চলছে, তার মধ্যে রয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার পাঁচপোতা, নদীয়ার হাকনাবাড়ি, মালদার পাপুয়াহাট, আর মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণপুর, ধনিরামপুর আর ধুলিয়ান। সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এই হাটগুলোর অবস্থান গরু পাচারের জন্য একেবারে উপযুক্ত।দক্ষিণবঙ্গেই সীমান্তবর্তী এলাকায় মোট কুড়িটি গরুর হাট রয়েছে। একেবারে সীমান্তে শয়ে শয়ে গরু নিয়ে গিয়ে যখন হাজির হয় পাচারকারীরা, তখন তা আটকানো কঠিন হয়ে পড়ে বি এস এফ রক্ষীদের পক্ষে। আট কিলোমিটার দূরে যদি হাটগুলো সরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে নজরদারী আর পাচার রোখার জন্য অনেকটা এলাকা আর সময় পাওয়া যাবে। সেজন্যই সরকারেরই দেওয়া নির্দেশ আবারও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায় নি বলেই বি এস এফ জানিয়েছে। যে ছয়টি হাট এখনও ওই আট কিলোমিটার এলাকার মধ্যে চলছে বলে বি এস এফ জানিয়েছে, তার মধ্যে একটি হল উত্তর চব্বিশ পরগণার পাঁচপোতায়। ওই অঞ্চল থেকেই দীর্ঘদিন বিধায়ক ছিলেন বর্তমান রাজ্য সরকারের মন্ত্রী জ্যেতিপ্রিয় মল্লিক।
তিনি জানিয়েছেন, “ওই হাটগুলো সরিয়ে আট কিলোমিটার দূরে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা তো বি এস এফেরই ঠিক করে দেওয়ার কথা ছিল। সীমান্ত অঞ্চল উন্নয়ন তহবিলের টাকায় সেই জমিও বি এস এফেরই কিনে দেওয়ার কথা ছিল। এত বছরে তো ওরা নিজেরাই কাজটা করে উঠতে পারে নি।“ উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আরও বলছিলেন যে গরু পাচারের সমস্যা সমাধান করার জন্য গাইঘাটার বিধায়ক হিসাবে দশ বছরে অন্তত দেড়শো চিঠি লিখেছেন তিনি, কোনও কাজ হয় নি। “পাচারকারীরা আমাদের কৃষকের জমির ওপর দিয়ে ফসল নষ্ট করে দিয়ে গরু নিয়ে যাবে বছরের পর বছর, বাধা দিলেই হামলা চালাবে, এ আর কতদিন চলবে?” প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী জ্যেতিপ্রিয় মল্লিকের। বি এস এফের আই জি সন্দীপ সালুঙ্কের কথায়, “রাজ্য সরকার যদি হাটগুলো সরিয়ে নেয়, তাহলে আমাদের পক্ষে গরু পাচার বন্ধ করা সহজ হবে। সীমান্ত অঞ্চলের অন্যান্য গুরুতর অপরাধের দিকে বেশী নজর দিতে পারবে বি এস এফ।“ কুরবানি ঈদের আগে সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে গরু পাচার বাড়তে পারে বলে বি এস এফের আশঙ্কা। গতবছর থেকেই ঈদের অনেক আগে থেকেই গরু পাচার বন্ধে বিশেষ নজরদারি চালিয়েছিল তারা, যার ফলে, তাদের দাবী, পাচার অনেকটাই আটকানো গিয়েছিল।