মীর কাসেমের রিভিউ শুনানির রায় আজ

0
1095

গড়াইনিউজ২৪.কম:: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর করা রায় রিভিউয়ের (পুনর্বিবেচনা) রায় দেয়া হবে আজ মঙ্গলবার। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেবেন। আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় এক নম্বরে এ রিভিউ আবেদনটি এসেছে। এর মধ্য দিয়ে মীর কাসেম আলীর আইনি লড়াই শেষ হচ্ছে। গত রবিবার কাসেম আলীর করা রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়।২৪ আগস্ট রিভিউয়ের শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এই মামলার প্রসিকিউশনের দুর্বলতার কথা আদালতের পক্ষ থেকে এর আগে একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে দুর্বলতার কিছু দিকও তুলে ধরে বলা হয়েছে। এমনকি মামলার প্রসিকিউশন টিমকে আসামিদের মতো কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত। তাছাড়া অন্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের রিভিউ আবেদনের শুনানিতে যে সময় নেয়া হয় মীর কাসেম আলীর ক্ষেত্রে দ্বিগুণ সময় নেয়া হয়েছে। সব দিক বিবেচনায় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার ‘উদ্বেগ’কী বার্তা দিচ্ছে তা পরিষ্কার নয়। জামায়াতে ইসলামীর অর্থ জোগানদাতা মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ হলে একাত্তরের এই বদর নেতার ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে। সামনে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ থাকলেও এ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধাপরাধীর আবেদন মঞ্জুর করেননি রাষ্ট্রপতি। দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ‌মধ্যে এখন পর্যন্ত মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তিতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগছে। দণ্ড এড়াতে মীর কাসেম বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আপিল বিভাগে শুনানিতেও ‘লবিংয়ের জন্য’ তার ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেছিলেন।
সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার একটি বক্তব্য ধরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সভা ডেকে প্রতিবাদ জানালে অ্যাটর্নি জেনারেল মীর কাসেমের রিভিউ শুনানির সময়টিতে অন্য বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। রায় নিয়ে সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার ‘উদ্বেগের’কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমি ভেতরে ভেতরে উদ্বিগ্ন, অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’তবে উদ্বেগের কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেপ্তার হন মীর কাসেম। পরে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। ২০১৩ সালের ১৬ মে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয় ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর। ৩০ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে মামলাটি স্থানান্তর করা হয় ট্রাইব্যুনাল-২ এ। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ নভেম্বর আপিল করেন তিনি। গত ৮ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। ১৯ জুন মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম। রিভিউ আবেদনে মীর কাসেমের খালাস চাওয়া হয়।