অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের হাসপাতালের বাইরে অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে

0
528

জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়ন্তী,গড়াইনিউজ ২৪.কম: জনবল সংকট ও রোগীর চাপে খুলনার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীরা ভর্তি হতে এসে অপেক্ষায় করতে করতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, তারা উপায়হীন। তারাও নিজেরাও এ সমস্যা নিয়ে হিমশিম অবস্থায় রয়েছেন। এ হাসপাতালে করোনায় পজিটিভ হয়ে রোববার (৬ জুন) চিকিৎসা নিতে আসেন মারুফা আক্তার (৩৫)।  মুখে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় হাসপাতালে গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন ভাগ্নি আমেনা খাতুন।   আমেনা বলেন, অক্সিজেন লেবেল ৬৫-৭০ থাকায় মামীকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু এখানে আধা ঘন্টা ধরে অপেক্ষায় রয়েছি। করোনার রিপোর্ট না পেলে ভর্তি নিচ্ছে না।  মামা রিপোর্ট আনতে বাইরে গেছেন। আমরা বলেছি, আগে অসুস্থ রোগীকে ভেতর নেন। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।  কিন্তু কেউ শুনছে না। করোনা উপসর্গ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আসেন মো. আবু কায়সার (৭০)। তার স্বজন আতিকুর রহমান জানান, বয়স হওয়ায় তিনি হাঁটতে পারছেন না। ট্রলির জন্য ভেতরে লোক গেছে। ২০-২৫ মিনিট হয়ে গেছে। এদিকে তার কষ্ট হচ্ছে। মারুফা আক্তার ও আবু কায়সারের মতো অনেকেই চিকিৎসা নিতে এসে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন।   হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে এ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৭৮ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ছিলেন ৭৪৭ জন, বাকিরা মহিলা। গত ৩৬ দিনে (১ মে থেকে ৫ জুন) এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৫০ জন। এর মধ্যে মে মাসে মারা গেছেন ৩৫ জন। আর চলতি জুন মাসে (৬ জুন সকাল পর্যন্ত) ১৫ জন। এই সময়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান আরও ৬ জন। সোমবার (৭ জুন) এ ব্যাপারে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ও আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার  বলেন, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত এইচডিইউ, আইসিইউ ও রেড জোন মিলে ৯৫ জন এবং ইয়োলো জোনে ৩০ জনসহ মোট ১২৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এ সময় পর্যন্ত মারা গেছেন ৬ জন।  এর মধ্যে রেড জোনের রোগী ছিলো ৫ জন। বেলা যতো বাড়ে, হাসাপাতালে রোগীও ততো আসতে থাকে।  বেড সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। তার সঙ্গে জনবল সঙ্কট তো লেগেই আছে। যার কারণে অনেক সময় ভর্তি হতে আসা রোগীরা একটু ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন- চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সেবাকর্মী যারা ডিউটিতে আছেন, তারা রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। যারাই চিকিৎসা নিতে আসুক না কেনো তাদেরকে সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত মে মাসে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে টেস্টে মোট করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় ১ হাজার ২৮৪ জন। এর মধ্যে খুলনা জেলাতেই ছিল ১ হাজার ২১ জন।