কুষ্টিয়া সদর পৌর বিএনপি’র কুতুব-বাবুর কমিটিই অনুমোদন পাচ্ছে!

0
1650

ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: গত ২১ মার্চ রাত ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানস্থ কার্যালয়ে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি’র কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তৃণমুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাজাহান প্রমুখ। জানা যায়, গত বছরের ১৯ নভেম্বর তৃনমুলের সমর্থনে শহর বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়ভাবে কোন নিষ্পত্তি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহার সিদ্ধান্ত হয়। ২১মার্চ রাত ৯টায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানস্থ কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় এবং জেলার নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে কুতুব উদ্দিন আহমেদ এবং এ কে বিশ্বাস বাবু ঘোষিত পৌর কমিটি বৈধ ঘোষণা করে তা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লেখ্য, ওই সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলনকে সভাপতি এবং কাজল মাজমাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে পৌর বিএনপি’র আরেকটি কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। ওই কমিটির সমর্থন ছিল জেলা বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী’র। পাল্টা কমিটি ঘোষণা করায় জটিলতা তৈরী হয়। মিলন-কাজল নয় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে শেষপর্যন্ত কুতুব-বাবু নেতৃত্বাধীন কুষ্টিয়া সদর পৌর বিএনপি’র কমিটিই অনুমোদন পাচ্ছে। এর ফলে প্রায় ৫ মাস ধরে চলা কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি’র কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছিল তার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।  উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৬ বছর পর ১৯ নভেম্বর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির পাল্টাপাল্টি সম্মেলন হয়। মূল অংশটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিনের বাড়ির সামনে ও একটি ক্ষুদ্র অংশ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সম্মেলনে করে। সম্মেলন শেষে পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা বিএনপি সুত্র জানায়, অক্টোবরে শহর বিএনপির কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেই মোতাবেক শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তন ভাড়া করা করা হয়। সম্মেলনের আগের দিন বরাদ্দ বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। এরপর দ্বিতীয় দফায় সম্মেলনের জন্য পৌরসভার অডিটরিয়াম ভাড়া করা হয়। কয়েকদিন আগে সেই বরাদ্দ বাতিল করে দেয় পৌরসভা। এরপর ১৯ নভেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী আহমেদ রুমী ও সাধারন সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের সম্মতিতে পুর্বমজমপুর এলাকায় তার বাড়িতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ২১টি ওয়ার্ডের ৪৬জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৩৬জন উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে সম্মেলন শেষে পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক একে বিশ্বাস বাবুকে সাধারন সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। বাকি সদস্য কমিটির নতুন নেতারা নির্বাচিত করবেন। এদিকে, এ সম্মেলন বয়কট করে জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতার উপস্থিতিতে এনএস রোডে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে পাল্টা সম্মেলন ডাকে একটি অংশ। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এমএ শামীম আরজু। ওই সম্মেলনে মাত্র ওয়ার্ডের মাত্র ৫ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে কমিটি ঘোষণা করেন এমএ শামীম আরজু। কমিটিতে পৌর কাউন্সিলর মহিউদ্দিন মিলন চৌধুরীকে সভাপতি ও কাজল মাজমাদারকে সাধারন সম্পাদক করা হয়েছে। মূলত, জেলা কমিটি পৌর কমিটির অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার রাখলেও দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক দু’জন দুই মেরুতে থাকায় কোন কমিটিই অনুমোদন হয়নি। এর ফলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় দলে এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে কমিটি অনুমোদনের নির্দেশনাও দেয়া হয়। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্যে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র দায়িত্বশীল একজন নেতার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সাথে তৃণমুল নেতৃবৃন্দের ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। দ্রুতই পৌর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পাবে। এর ফলে কমিটি নিয়ে যে জটিলতা তৈরী হয়েছিল তার সমাধান হয়ে যাবে। ম্যাডাম খালেদা জিয়া আমাদেরকে যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেই সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেছি। তাঁর সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার কোন সুযোগ নেই।