জামায়াত পন্থী মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুনমুন নেছা বেতন নেন কিন্তু সেবা দিতে আসেন না!

0
278

সেলিম রেজা সালাম, গড়াইনিউজ২৪.কম:: কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলা একটি বিশাল জনপদ। এই উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনার একটি সেবা প্রতিষ্ঠান মিরপুর পরিবার পরিকল্পনা সদর অফিস। যেখানে ৬ দিন সকাল ৮.৩০মিনিট থেকে দুপুর ২.৩০মিনিট পর্যন্ত সেবা দেওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে সপ্তাহে ১ দিন এক ঘন্টার জন্য মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুনমুন নেছার রুমের তালা খোলা হয়। তবে সেবা নামের সোনার হরিন অধরাই রয়ে গেছে এই উপজেলার লোকজনের। সরেজমিনে ঘুরে কয়েকদিনের চিত্রে দেখা গেছে বাইরে থেকে তালা লাগানো মিরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সদর অফিসের দ্বিতল ভবনটি। ভুক্তোভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত পন্থী এই ডাঃ মুনমুন নেছা যেদিন অফিসে আসেন ঘন্টাখানেকের জন্য তাও আবার রোগী না দেখে স্টাফদের সাথে খোশগল্প এবং ব্যক্তিগত কাজ করে চলে যান। মুখে আওয়ামী লীগ আর অন্তরে জামায়াত এর রুপ নিয়ে তিনি স্টাফদের সাথে খারাপ আচরন, রোগীদের সাথে খারাপ আচরন সহ নানান অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জামায়াত করলেও তিনি আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতাদের নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন বলে জানা যায়। এখানে প্রতিদিনই নারীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন বলে ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন সংশ্লিষ্টদের অনুপস্থিতি আর গাফিলতির কারনে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে এই উপজেলার গরীব মানুষগুলো।

নির্দেশনা মোতাবেক মিরপুর উপজেলায় মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুনমুন নেছার নিয়ন্ত্রণে ১০জন এসএসিএমও, ২০জন এফডবøুউভি, ৭ জন এমএলএসএস, ৭ জন আয়া ও ১ জন অফিস সহকারী কাজ করেন। এদের মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেন মিরপুর মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ এইখানে আওয়ামী পন্থী যেসব কর্মীরা আছেন তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, মালামাল ক্রয় করার নামে বিল আত্মসাৎ, গত দুই বছর করোনা মহামারীর মধ্যে কোন বিল ভাউচারে সাইন না করে বিপদের মধ্যে ফেলেছেন এইসব কর্মচারীদের। তারা আরো বলেন কপাটি বিল, এফপিআই এর বিল, লাইগেশন এর বিল আটকানো সহ ভুয়া বিল ভাউচার করে তার লোকজন দিয়ে বিল তুলে নিজের পকেট ভরান। আওয়ামী পন্থী কর্মচারীদের সব সময় হয়রানী, মানহানি এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের আয়ত্বে রাখার চেষ্টা করেন। বিএনপি এবং জামায়াত পন্থী কর্মচারী আছেন তাদেরকে নিজের মতো করে বিল দেন এবং অনেক সুযোগ সুবিধা দেন। তাদেরকে তাদের সুবিধামতো জায়গায় বদলি করেন। এছাড়াও সরকারি কোন বরাদ্ধ আসলে ভুয়া বিল ভাউচার করে বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। বলেন এক দেয় আর এক রকম বিল।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় এখানে কর্মরত শুধু একজন অফিস সহকারীর দেখা মেলে। এখানে প্রতিদিন রোগীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এই কারণে সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সদরে যেতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিরপুর উপজেলা পরিষদের সদস্য বলেন, মাঝে মাঝে একজন আসেন কয়েক ঘণ্টা থেকে আবার চলে যান, তিনি বলেন এখানে সকাল থেকে মানুষের সেবা দেয়ার কথা থাকলেও তারা তা করেন না। সাধারণ মানুষ সেবা না পেয়ে প্রতিদিনই ফিরে যাচ্ছেন, তারা চাকরি করেন, বেতন নেন, কিন্তু সেবা দিতে আসেন না। সরকারি নির্দেশনা থাকলেও মিরপুর পরিবার পরিকল্পনা অফিসে মেডিকেল অফিসার অবস্থান না করায় সাধারণ জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত। এতে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েই যাচ্ছে। অবিলম্বে মিরপুর পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোড় দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল। এই বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ পরিচালক মোঃ মিনহাজুল হক এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমিও শুনেছি, আপনারা তদারকি করার কারনে সে দুই এক দিন ঠিকমতো ডিউটি পালন করছেন বলে আমি জানি, তবে তদারকি করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। তারপরও আমি নোট দিয়ে রাখলাম বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সহকারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। (প্রথম পর্ব)

গড়াইনিউজ/রাব্বী