চক্রের মূলহোতা বেঙ্গল হার্ডওয়্যারের মালিক মহিবুল পলাতক!

0
1064

গড়াইনিউজ২৪.কম:: জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে একটি পরিবারের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে ৫ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার যমুনা টেলিভিশনের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রীতে এই প্রতারণা ও জালিয়াতির সংবাদ প্রচার হলে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। পুলিশ বলছে, এই জালিয়াতির সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার খন্দকার আবুল হোসেন ছেলে মোঃ ওয়াদুল ওরফে মিন্টু খন্দকার (৬০), কুমারখালী উপজেলার শালঘর মধুয়া গ্রামের আতিয়ার শেখের ছেলে মোঃ মিলন হোসেন (৩৮), মূল হোতা মিন্টু খন্দকারের বোন কুমারখালী উপজেলার লাহিনী দাসপাড়ার সাত্তার শেখের স্ত্রী ছানোয়ারা খাতুন (৫০) ও অপর বোন খন্দকার আব্দুল আজিজেরর স্ত্রী মোছাঃ জাহানারা খাতুন (৪৫) ও জমির ক্রেতা মিরপুর উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের কাটদহচর গ্রামের মৃত সাহাজদ্দিন বিশ^াসের ছেলে মহিবুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। চক্রটি কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডের বাসিন্দা মৃত এম, এম, এ হাকিমের ছেলে এম. এম. এ ওয়াদুদের পৈত্রিক সম্পত্তি তার মা মোকসুদা খাতুন, চার বোন রিজিয়া খাতুন, বাসেরা খাতুন, সেলিমা কবির ও শামীমা খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে শহরের প্রতারক চক্র তাদের নামে ভূয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করে মজমপুর মৌজার ২৫৭৫, ২৫৭৬, ২৫৮০, ২৫৮১ দাগের মধ্যে ০.২২ একর জমি বিক্রয় করে। এছাড়াও কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন মজমপুর, চৌঁড়হাস, বাহাদুরখালী মৌজার জমি জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরী করে আত্মসাতের চেষ্টা করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তভোগি নির্বাচন কমিশনসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন। পাশাপাশি এই চক্রের মূলহোতাসহ প্রতারকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে ইলেক্ট্রনিক্্রস মিডিয়া।
অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, জমির ক্রেতা মিরপুরের কাটদহচর গ্রামের মহিবুল ইসলাম রাজা মেটাল ইন্ডাঃ লিমিটেড নামে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করেন। তার মাসিক বেতন ৩৫ হাজার টাকা। সামান্য বেতনে চাকরী করে মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ব্যক্তি কিভাবে ৭ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি ৭৭ লক্ষ টাকায় ক্রয় করলেন তা অনুসন্ধানে নেমে যমুনা টিভির ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রী টিমের কাছে তিনি স্বীকার করেন এই জমি ক্রয়ের ৭৭ লক্ষ টাকা তাকে প্রদান করেন বড়বাজারের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী মহিবুল ইসলাম। ধারনা করা হচ্ছে শহরের মজমপুর গেট এলাকায় প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের জমিটি নামমাত্র মূল্যে প্রতারক চক্র ৭৭ লক্ষ টাকায় রেজিষ্ট্রি করে তা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর এই চক্রের মূলহোতা হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী বেঙ্গল হার্ডওয়্যারের মালিক মহিবুল ইসলাম। এই জমি দখলে নিতে একটি প্রভাবশালী মহল বেশকিছুদিন ধরে এই মহিবুলের পক্ষে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। তাদের বিষয়ে আরো অনুসন্ধান চলছে। কে কিভাবে মহিবুলকে এই জমি দখলে নিতে সহযোগিতা করেছেন তার সকল তথ্য প্রমান যমুনা টেলিভিশনের কাছে এসেছে ধারাবাহিকভাবে তা প্রচার করা হবে। মহিবুলের বিরুদ্ধে এই ধরনের আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামান্য কয়েক বছরে শতকোটি টাকার মালিক হওয়া মহিবুলের টাকার উৎস নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।  কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত জানান, শুক্রবার যমুনা টিভির ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রী ও অন্য একটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রচার হলে ভুক্তভোগীকে অভিযোগপত্র প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়। তারই ভিত্তিতে গত রাতে পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করে। এর প্রতারণার সাথে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।