দেশে প্রথমবারের মতো ছিদ্র করে হার্টের ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন

0
428

গড়াই নিউজ২৪.কম::দেশের কোনো সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো বুকের হাড় না কেটে ২৫ আগস্ট সফলভাবে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন চিকিৎসকরা। প্রায় একই সময়ে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় সম্পন্ন করা হয় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) ডা. আশরাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে দেশে প্রথমবারের মতো দুই থেকে তিন ইঞ্চি ফুটো করে এমআইসিএস (MICS) পদ্ধতিতে হার্টের ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হলো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নতির ধারাবাহিকতায় যোগ হচ্ছে নতুন অর্জন। বিশ্বের খুব অল্প দেশেই এভাবে এমআইসিএস পদ্ধতিতে হার্টের ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়। হৃদরোগ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় এটি একটি অনন্য মাইলফলক।

২৫ মে হাসিনা বেগম নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারীর দেহে দেশে প্রথম বারের মতো দুই থেকে তিন ইঞ্চি ফুটো করে MICS পদ্ধতিতে হার্টের ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করেন ডা. আশরাফুল হক সিয়াম। তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিউটে কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় এই অস্ত্রোপচার চলে।

ডা. সিয়ামের নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচারে অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অ্যানেসথিস্ট হিসেবে অধ্যাপক ডা. শাহনাজ, সহকারী অধ্যাপক ডা. সালাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. রোমেনা রহমান, ডা. আসিফ আহসান চৌধুরী, ডা, ইমরান ডা. মঞ্জুর, ডা. ওয়াহিদা ডা. সায়েম, ডা. রুবাইয়াত, ডা. সৌরভ ও ডা. তানভীর হোসাইন।

অস্ত্রোপচার শেষে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় হাসিনা বেগমের।তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি অস্ত্রোপচার ভয় পেতাম। তবে ইউটিউবে দেখেছি আমাদের দেশেই এখন আধুনিক পদ্ধতিতে হার্টের চিকিৎসা হয়। আর এরপরে আমি এখানে চিকিৎসা নিই। অস্ত্রোপচারের তিন দিন শেষ হয়েছে। আমি ভালো আছি।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন খুব দ্রুতই বাড়ি যেতে পারব।’

 

বিজ্ঞাপন

ডা. আশরাফুল হক সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডাবল ভাল্ব অপারেশন হার্টের অত্যন্ত জটিল একটা অপারেশন। MICS পদ্ধতিতে মাত্র দুই থেকে তিন ইঞ্চি ফুটো করে ভাল্ব প্রতিস্থাপন সারাবিশ্বেই অত্যন্ত বিরল। সারা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে এ ধরনের আধুনিক পদ্ধতিতে অপারেশন হয়ে থাকে। আজ আমরাও সেই মাইলস্টোন এ পা দিতে পেরেছি এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পেরেছি।’

এখন আর বিদেশে নয় বিদেশিরাই আমাদের দেশে হার্টের চিকিৎসা নিতে আসবে ইনশাআল্লাহ—যোগ করেন ডা. সিয়াম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে তারই ধারাক্রমে আমরা ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট MICS পদ্ধতিতে সরকারিভাবে প্রথম হার্টের ফুটো অপারেশনের মাধ্যমে পথ চলা শুরু করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় আজ আমরা দেশে প্রথমবারের মতেন MICS পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি ফুটো করে ডাবলভাল্বের মতো জটিল অপারেশন করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ এই কার্ডিয়াক সার্জন বলেন, ‘স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে দেশেই হার্টের ট্রান্সপ্লান্ট শুরু করার।’

এই অপারেশনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ডা. আশরাফ সিয়াম।

কার্ডিয়াক সার্জনস সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি দেশের কার্ডিয়াক সার্জনদের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ এর দিকে এই হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ছিল একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে কার্ডিয়াক সার্জারি হতো। তখন কিন্তু তেমন বাইপাস হতো না। সেই পরিস্থিতি বিবেচনা করলে বাংলাদেশে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের এখানে এখন অনেক ধরনের অপারেশন হয়।’

তিনি বলেন, ‘হার্ট সার্জারি কিন্তু অনেক টেকনিক্যাল একটা বিষয়। তার মধ্যে MICS হচ্ছে আরও অনেক টেকনিক্যাল সার্জারি। এটা পৃথিবীর খুব বেশি দেশে হয় না। কিছু দেশের কয়েকটা কেন্দ্রে হয়। আমাদের দেশে এটা হচ্ছে এখন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন একটা বড় ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন। সেটা MICS পদ্ধতিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতন হলো। যেহেতু এটা শুরু হয়েছে আশা করি ভবিষ্যতে আমরা আরও এগিয়ে যাব। আর এই শুরুটা করার জন্য ডা. সিয়ামকে জানাই অভিনন্দন। এটা একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে হৃদরোগের চিকিৎসায়।’

 

জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক মীর জামালউদ্দিন বলেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, আমরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এই ধরনের কসমেটিক সার্জারি শুরু করতে পেরেছি। এই পদ্ধতিতে অপারেশনের সুবিধা হলো রোগীর রক্তক্ষরণ কম হয়, ব্যথাও কম অনুভব হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সেবা দেওয়ার পরিধি আরও বাড়াচ্ছি। বর্তমানে আমাদের এখানে যেভাবে সেবা দেওয়া হচ্ছে তার পরিধি আরও বাড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের এখানে ১ হাজার ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে যার মধ্যে ৭৫০ শয্যায় এরইমধ্যে সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। বাকিগুলোও এক থেকে দুই মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি চলছে। MICS পদ্ধতিতে আমাদের তরুণ সার্জনরা এখানে খুব সূক্ষ্ম একটা ছিদ্রের মাধ্যমে বড় আকারের অপারেশনও করে ফেলছে। এটি আমাদের জন্য একটা বিশাল অর্জন। এই প্রথমবারের মতন এমন অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হলো ডা. সিয়ামের নেতৃত্বে। রোগীও ভালো আছে।’

জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের প্রথম কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউট ও প্রাইম ইনস্টিটিউট হিসেবে সামনের দিনগুলোতে আরও এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. মীর জামালউদ্দীন।

ডা. আশরাফুল হক সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডাবল ভাল্ব অপারেশন হার্টের অত্যন্ত জটিল একটা অপারেশন। MICS পদ্ধতিতে মাত্র দুই থেকে তিন ইঞ্চি ফুটো করে ভাল্ব প্রতিস্থাপন সারাবিশ্বেই অত্যন্ত বিরল। সারা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে এ ধরনের আধুনিক পদ্ধতিতে অপারেশন হয়ে থাকে। আজ আমরাও সেই মাইলস্টোন এ পা দিতে পেরেছি এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পেরেছি।’

এখন আর বিদেশে নয় বিদেশিরাই আমাদের দেশে হার্টের চিকিৎসা নিতে আসবে ইনশাআল্লাহ—যোগ করেন ডা. সিয়াম।

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে তারই ধারাক্রমে আমরা ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট MICS পদ্ধতিতে সরকারিভাবে প্রথম হার্টের ফুটো অপারেশনের মাধ্যমে পথ চলা শুরু করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় আজ আমরা দেশে প্রথমবারের মতেন MICS পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি ফুটো করে ডাবলভাল্বের মতো জটিল অপারেশন করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ এই কার্ডিয়াক সার্জন বলেন, ‘স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে দেশেই হার্টের ট্রান্সপ্লান্ট শুরু করার।’

এই অপারেশনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ডা. আশরাফ সিয়াম।

কার্ডিয়াক সার্জনস সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি দেশের কার্ডিয়াক সার্জনদের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ এর দিকে এই হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ছিল একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে কার্ডিয়াক সার্জারি হতো। তখন কিন্তু তেমন বাইপাস হতো না। সেই পরিস্থিতি বিবেচনা করলে বাংলাদেশে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের এখানে এখন অনেক ধরনের অপারেশন হয়।’

তিনি বলেন, ‘হার্ট সার্জারি কিন্তু অনেক টেকনিক্যাল একটা বিষয়। তার মধ্যে MICS হচ্ছে আরও অনেক টেকনিক্যাল সার্জারি। এটা পৃথিবীর খুব বেশি দেশে হয় না। কিছু দেশের কয়েকটা কেন্দ্রে হয়। আমাদের দেশে এটা হচ্ছে এখন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন একটা বড় ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন। সেটা MICS পদ্ধতিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতন হলো। যেহেতু এটা শুরু হয়েছে আশা করি ভবিষ্যতে আমরা আরও এগিয়ে যাব। আর এই শুরুটা করার জন্য ডা. সিয়ামকে জানাই অভিনন্দন। এটা একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে হৃদরোগের চিকিৎসায়।’

জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক মীর জামালউদ্দিন বলেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, আমরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এই ধরনের কসমেটিক সার্জারি শুরু করতে পেরেছি। এই পদ্ধতিতে অপারেশনের সুবিধা হলো রোগীর রক্তক্ষরণ কম হয়, ব্যথাও কম অনুভব হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সেবা দেওয়ার পরিধি আরও বাড়াচ্ছি। বর্তমানে আমাদের এখানে যেভাবে সেবা দেওয়া হচ্ছে তার পরিধি আরও বাড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের এখানে ১ হাজার ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে যার মধ্যে ৭৫০ শয্যায় এরইমধ্যে সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। বাকিগুলোও এক থেকে দুই মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি চলছে। MICS পদ্ধতিতে আমাদের তরুণ সার্জনরা এখানে খুব সূক্ষ্ম একটা ছিদ্রের মাধ্যমে বড় আকারের অপারেশনও করে ফেলছে। এটি আমাদের জন্য একটা বিশাল অর্জন। এই প্রথমবারের মতন এমন অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হলো ডা. সিয়ামের নেতৃত্বে। রোগীও ভালো আছে।’

জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের প্রথম কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউট ও প্রাইম ইনস্টিটিউট হিসেবে সামনের দিনগুলোতে আরও এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. মীর জামালউদ্দীন।

শারমিন আক্তার সোমা/গড়াই নিউজ২৪.কম::