বসুন্ধরা হাসপাতালের কাজ পুরোদমে চলছে!

0
1497

ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। আগামী ২৪ এপ্রিল হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্য নিয়ে দিন-রাত সমানতালে কাজ করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে হাসপাতাল নির্মাণের সবধরনের সামগ্রী চলে এসেছে। এখন শুধু সেট করা হচ্ছে। রোববার (১৯ এপ্রিল) নির্মাণাধীন হাসপাতাল চত্বরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (ঢাকা সিটি বিভাগ) মো. মাসুদুল আলম কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অগ্রগতি তুলে ধরেন।দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকায় সম্প্রতি সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আইসিসিবিতে হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করে গত ১২ এপ্রিল। ১৫ দিনের মধ্যে হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে দিন-রাত সমানতালে কাজ চলছে। মাসুদুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে ৩০০ বেড চলে এসেছে। প্রতিদিন ২০০টি করে বেড আসছে। ফ্লোরে কার্পেট বসানো শেষ হলে বেড ও অন্য ফার্নিচার সেট করা হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের চেম্বার ও ওয়ার্কস্টেশন লে-আউট করবো। তারপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করবো। আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। আমরা পারবো বলে আশাবাদী।

তিনি বলেন, এখন সবধরনের কাজ চলছে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সেট করা, সাবস্টেশন বসানো, গ্যাস ট্রলি চালানোর লাইন, নেবুলাইজার চালানোর পাওয়ার সকেট বসানোর কাজ চলছে। হাসপাতাল তৈরির সবধরনের জিনিসপত্র চলে এসেছে। এখন ফিটিং করতে যতটুকু সময় লাগে। আমাদের লোকজন এখানে (আইসিসিবি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মাঠে দিন-রাত কাজ করছে। ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ এ স্লোগানের আলোয় পথচলা বসুন্ধরা গ্রুপ করোনা ভাইরাসের এ দুর্যোগকালেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। আইসিসিবির দেড় লাখ স্কয়ার ফিটের ট্রেড সেন্টার ও পাঁচটি কনভেনশন হলে হাসপাতাল নির্মাণে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল পরির্দশন করে পরবর্তীতে এটাকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা আইসোলেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কোভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে দুই হাজার ৮৪ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে প্রয়োজন দেখা দিলে এটিকে পাঁচ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা যাবে। এ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলে বাংলাদেশে এটিই হবে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বৃহত্তম সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। মাসুদুল আলম বলেন, চীনের উহানে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় হাসপাতাল নির্মাণের অভিজ্ঞতা শুনেছি। আর নিজেরাই এখন সেটি তৈরি করছি। এজন্য বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা অনেক গৌরবান্বিত যে, আমরাও পারি। উহানে চীনারা দুই হাজার বেডের হাসপাতাল তৈরি করেছিল। আমরা ১০-১২ দিনে সাড়ে তিন হাজার বেডের হাসপাতাল তৈরি করছি। আইসিসিবে দুই হাজার ১৩ বেড, ৭১টি আইসিইউ ও ডিএনসিসিতে দেড় হাজার বেডের হাসপাতালের কাজ একইসঙ্গে চলছে। তিনি বলেন, এখানে আড়াইহাজার কেভিএর নতুন সাবস্টেশন করার ট্রান্সফরমার আনা হয়েছে। আনা হয়েছে এক হাজার কেভিএ জেনারেটরও। এখন শুধু ফিটিং করে সংযোগ দেওয়া হবে। এটাই আমাদের মূলত বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ এসময়ে জনবল ও জিনিসপত্র সংগ্রহ করাই বেশি দূরহ ছিল। আমরা আশাবাদী আগামী ২৩ এপ্রিলই কাজ শেষ করতে পারবো।