কুষ্টিয়া ফয়সাল টাওয়ার গড়াই খালের ভিতরে প্রায় ১০ ফিট : যেন দেখার কেউ নেই!

0
1088
ফয়সাল টাওয়ারটি মরা গড়াই নদের মধ্যে প্রায় ১০ ফিট মত ঢুকে আছে। ছবি: গড়াইনিউজ২৪.কম

কে এম শাহীন রেজা, গড়াইনিউজ:: কুষ্টিয়া শহরের মঙ্গলবাড়ীয়া ব্রীজের পূর্ব-দক্ষিন কর্ণারে ৬৬/১ দাদাপুর সড়ক ফাইজার ভবন নামে ফয়সাল টাওয়ারের সুবিশাল ১০তলা ভবনের নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। উক্ত ব্রীজের নীচ দিয়ে বয়ে গেছে গড়াই নদীর মরা খাল, উক্ত খাল খনন কাজ কিছুটা শুরু করার পর-পরই মঙ্গলবাড়ীয়া ব্রীজের খালের পশ্চিম পাড়ের কয়েকটি বাড়ী ভাঙার পর স্থানীয় জনতার বাঁধার মুখে পড়ে তা বন্দ হয়ে যায়। কারন জানতে এলাকাবাসী বলেন, ফয়সাল টাওয়ারটি মরা গড়াই নদের মধ্যে প্রায় ১০ ফিট মত ঢুকে আছে। উক্ত টাওয়ারটি বাঁচাতে ফয়সাল টাওয়ারের মালিক মোজাফ্ফর ও পৌরসভার সার্ভেয়ার মান্নান অর্থের বিনিময়ে ভবনটি অক্ষত রাখতে বিভিন্ন ভাবে সকলকে ম্যানেজ করে চলেছে। তারা আরও বলেন, ভবনটির পশ্চিম পার্শ্বে যে ভাবে বাঁকা করে বাড়ী ভেঙেছে ঠিক একইভাবে পূর্ব পার্শ্বে ঠিক সেই পরিমান বাঁকা করে ভাঙতে হবে। ব্রীজের তলদেশে পানির গতি প্রবাহের শেষ প্রান্তে প্রায় ১০০ ফিট প্রশস্ত আছে বলে গোপন সুত্রে জানা গেছে। আর এই ১০০ ফিট প্রশস্ত রাখতে হলে ফয়সাল টাওয়ার ভাঙা লাগবে। টাওয়ারটি যেন ভাঙা না লাগে সে জন্য টাওয়ার মালিক মোজাফ্ফর ও সার্ভেয়ার মান্নান ভিভিন্ন দপ্তরে অর্থ ছিটাচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছেন, দেশের সকল অঞ্চলের নদ-নদী, খাল বিল দখল করে যে সকল ভূমিদশ্যুরা সরকারী সম্পত্তির উপর অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেল সে সকল স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হোক। সেই আংগিকে দেশের প্রতিটা জেলাতে ঐ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে ফেইস বুকের পাতায় ইতিপূর্বে একটি স্ট্যাটার্স দিলে এখনো ঝড় চলছে, উক্ত ঝড়ে অনেকে অনেক মন্তব্য করেছে তাদের মধ্যে, আকতার উজ্জামান মনি নামে একজন মন্তব্য করেছেন, আমার জানা মতে দুই ফুট বাঁধতে পারে এমন কিছু না অপর দিকে জায়গা আছে। মাহাবুব বাশার খাঁন মন্তব্য করেন, এখন অনেক দালালি হবে আপনারা দয়া করে বিষয়টা মেয়র মহোদয়কে জানাতে পারেন। সিহাব উদ্দিন মন্তব্য করেন, কাউকে ছাড় দিলে উদাহরন হয়ে থাকবে। সঠিক তথ্য অনুযায়ী সিদ্ধান্ত চাই। তরিকুল ইসলাম মিন্টু মন্তব্য করেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন। শাকিল আহমেদ মন্তব্য করেন, দালালদের কপাল খুলছে। তারেক হোসেইন মন্তব্য করেন, উনাদের হাত অনেক লম্বা৷ গরিবের বাড়ি বিনা নোটিশে ভেঙ্গে দিচ্ছে অথচ এসব জায়গায় যেয়ে তারা কেন নিরব। এভাবে একাধিক ব্যক্তি মন্তব্য করে চলেছেন সরকারী সম্পত্তির উপর অবৈধ ভবন নির্মানের বিষয়ে।
কুষ্টিয়া পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ রনভীর আহমেদ বলেন, গড়াই নদী থেকে শুরু হওয়া মরা গড়াই খালটি দৈর্ঘ্যে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। এ জন্য তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরন (সেক্টর) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পৌরসভা সূত্র আরও জানায়, নেশন টেক নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খননের কাজ পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে খাল খনন শুরু হয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই খনন শেষ করার কথা রয়েছে। গড়ে ৭০ ফিট প্রশস্তে ও ১৬ ফিট গভীরতায় খনন হবে। ২২ ফুট ঢালের দুই পাড়ে পায়ে হাটার রাস্তা হবে। যেখানে বহুতল ভবন বেধে যাচ্ছে সেখানে পায়ে হাটার রাস্তা কিভাবে হবে ? এ বিষয়ে জনমনে নানাবিধ প্রশ্ন জেগেছে। এদিকে জুন মাস শেষ হতে চলেছে এখনো সাড়ে আট কিলোমিটার খাল খননের এক তৃতীয়াংশ কাজ শেষ করতে পারে নাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় লোকজন আরও বলেন, কুষ্টিয়া শহরের উত্তর দিকে ঘেষে গড়াই নদী। পৌরসভার কমলাপুর এলাকায় গড়াই নদীর অংশ থেকে মরা গড়াই খালটি বের হয়েছে। সেটি শহরে কিছু অংশ এলাকার ভেতর দিয়ে আট কিলোমিটার দূরে কবরবাড়ি এলাকায় আরেকটি খালে মিশেছে। যার দৈর্ঘ্যে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার। এই খাল কোথাও ৮০ ফুট আবার কোথাও ১০০ ফুট প্রশস্ত ছিল।
এদিকে সার্ভেয়ার মান্নান উক্ত ভবনের পূর্ব পার্শ্বের একটি বাড়ীর ওয়ালে চিহ্ন দিয়ে গেছেন ৭০ ফিট হিসাব ধরে, কিন্তু এলাকাবাসী বলেন, ফয়সাল টাওয়ারকে বাঁচাতে সার্ভেয়ার মান্নান টাকা খেয়ে দশ তলা ভবন রক্ষা করতে পশ্চিম পার্শ্বের পাঁকা বাড়ী বাঁকা করে ভেঙে ফেলেন ম্যাপ না দেখে। বর্তমানে এলাকাবাসীর তোপের মুখে কাজ বন্দ রেখে সকলের মুখ বন্দ করতে উঠে পড়ে লেগেছে ফয়সাল টাওয়ারের মালিক মোজাফ্ফর ও পৌরসভার সার্ভেয়ার মান্নান। এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাদের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সূশীল সমাজ।