ব্যাংকিং খাতে কণ্ঠ ব্যবহার করে কাজের আদেশ দেওয়ার প্রযুক্তি বা ভয়েস কমান্ডের ব্যবহার বাড়ছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ ব্যাংক বার্কলেস টেলিফোন ব্যাংকিং গ্রাহকদের এই প্রযুক্তিগত সুবিধা দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রযুক্তিতে গ্রাহকের নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে সাজানো শব্দসমষ্টি শুনে গ্রাহককে শনাক্ত করতে পারে। ফলে পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন হবে না। অন্য ব্যাংকগুলোও গ্রাহকদের জন্য ভয়েস কমান্ড চালুর কাজ করে যাচ্ছে।
টেলিফোনে সেবা দেয় এমন আরেক ব্রিটিশ ব্যাংক ফাস্ট ডাইরেক্ট গত মার্চ মাস থেকেই গ্রাহকদের ভয়েস কমান্ড সেবা দেওয়া শুরু করেছে। এরও মাস খানেক আগে অনুরূপ প্রযুক্তির প্রচলন করে এইচএসবিসি।
বার্কলেসের পক্ষ থেকে বলা হয়, মুখ ও কণ্ঠনালির কাঠামো অনুসারে গ্রাহকদের কণ্ঠস্বরে প্রায় ১০০ রকমের বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে। ফোন কলের সময় গ্রাহকের কণ্ঠস্বর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রযুক্তি। পরবর্তীতে এই তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে নির্দিষ্ট গ্রাহক শনাক্ত করতে পারে এটি। সর্দি-কাশি বা অন্য কোনো অসুস্থতার জন্য কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন এলেও সমস্যা নেই। এমনকি লিঙ্গ পরিবর্তনের ফলে কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন এলেও এই প্রযুক্তি তা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে। নকল করে কিংবা একই কণ্ঠস্বরের অধিকারী গ্রাহকের পারিবারিক সদস্যরাও এই প্রযুক্তিকে ফাঁকি দিতে পারবেন না।
২০১৩ সাল থেকে বার্কলেস ব্যাংক অল্পসংখ্যক গ্রাহকের তথ্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। এর মধ্যে ইচ্ছাপূর্বক প্রতারণার চেষ্টা করা-সংক্রান্ত একটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
ব্যাংকটির পার্সোনাল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান নির্বাহী স্টিভেন কুপার বলেন, ‘দরকারের সময় পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ার বিড়ম্বনা যে কি তা আমরা সবাই জানি। কণ্ঠনিরাপত্তা এই বিড়ম্বনা থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারবে। প্রত্যেক মানুষের আঙুলের ছাপের মতো তার কণ্ঠস্বরটিও অনন্য।’
ভোক্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফেইরার ফিনান্সের প্রতিষ্ঠাতা জেমস ড্যালে বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রক্রিয়া দ্রুততর করে এমন যেকোনো পদ্ধতি গ্রাহকেরা গ্রহণ করবেন। তবে নতুন এই প্রযুক্তি যে সম্পূর্ণ নিরাপদ তা প্রমাণ করতে ব্যাংকগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
মেহেদী হাসান, সূত্র: বিবিসি