শনিবার থেকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে: প্রতিমন্ত্রী

0
2527

গড়াইনিউজ২৪.কম:: বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নয়নে জন্য আর দুই দিন সময় চেয়েছেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি জানান, শনিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও অসহনীয় লোডশেডিং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বৃহস্পতিবার বিকালে বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নসরুল হামিদ। রমজান মাসে বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সিএসজি স্টেশন বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি। গত কয়েকদিন ধরে দুঃসহ গরম পড়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের লোডশেডিং ভোগাচ্ছে দেশবাসীকে। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে মানুষ। খোদ রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় দিনে এমনকি গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। মফস্বল বা গ্রাম এলাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক।  ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে নানা পদক্ষেপ নেয়। গত আট বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা চারগুণ হয়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। সর্বোচ্চ ক্ষমতার ৮০ শতাংশ উৎপাদন করলেও প্রতিদিন ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা অত নয়। এই পরিস্থিতি বিদ্যুৎ খাতের এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিয়ে সরকার বাগাড়ম্বর করছে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, গ্যাস সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত কয়েক দিনে একে একে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র। গত রবিবার বন্ধ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১৬টি। বুধবার এই সংখ্যায় যোগ হয় আরও চারটি কেন্দ্র। এই ২০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোডশেডিংয়ের প্রকোপ বেড়েছে। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। পিক আওয়ারে বর্তমানে চাহিদা সাগে নয় হাজার মেগাওয়াটের মত। তবে বুধবার উৎপাদন হয়েছে আট হাজার ৬১৫ মেগাওয়াটের মত। আবার উৎপাদনের পুরোটা ব্যবহার করতে পারে না গ্রাহক। কারণ, পরিবহন পর্যায়ে কিছু বিদ্যুৎ নষ্ট হয়ে যায়। আবার রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থাপনায় সার্বক্ষণিক সরবরাহ দিতে হয়। এ কারণে অন্যত্র লোডশেডিং বেড়ে যায়। গত সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সেদিনও তিনি চার দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস দেন।সরকার যখন বিদ্যুৎখাতে ব্যাপক উন্নয়নের দাবি করছে, তখন পরিস্থিতি এমন হল কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের এখন  চাহিদা ১০ হাজার পাঁচশ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন উৎপাদন আছে আট হাজার ছয়শ মেগাওয়াট। এর উপর ঘূর্ণিঝড়ে সামিট বিবিয়ানা পাওয়ারপ্লান্টের টাওয়ার ভেঙে পড়েছে। এজন্য বিদ্যৎ পরিস্থিতি এ অবস্থা হয়েছে।’ দুই দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক হবে-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতের সামিট বিবিয়ানা ৪৫০ মেগাওয়াট ও সামিট মেঘনা ঘাট ৩৫১ মেগাওয়াট বিদ্যৎকেন্দ্র দুটি শনিবার উদ্বোধন করা হবে। এই জন্যই বিদ্যৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তিনি বলেন, ‘এর বাইরে পুরো রমজানে বিদ্যৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বেসরকারি খাতের কিছু পাওয়ার প্লান্টকে সংস্কার করা হচ্ছে।’ বিদ্যৎ সঞ্চালন লাইনের যে বিভ্রাট রয়েছে তা তিন থেকে চার বছরের মধ্যে স্থায়ী সমাধান হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।