
ঢাকা অফিস, গড়াইনিউজ২৪.কম:: এবার ঈদুল আজহায় টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক্ষেত্রে ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি দিয়ে ঈদের আগের দুটি শনিবার (সাপ্তাহিক ছুটি) অফিস খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, দুটি সাপ্তাহিক ছুটির বদলে ১১ ও ১২ জুন ঈদের ছুটি দিয়েছে সরকার। সরকারের এমন নির্বাহী আদেশের পর দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে ১৭ ও ২৪ মে দুটি শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে। আর ১১ এবং ১২ জুন নির্বাহী আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘ঈদের ছুটি’ থাকবে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, ১১ ও ১২ জুন এমনিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ মিলিয়ে ওই সময়ে টানা ছুটি থাকবে। অর্থাৎ, ছুটির দুই দিনে ‘বন্ধ’ দিয়ে ঈদের আগের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে মন্ত্রণালয়।
ছুটির দিনে ‘নির্বাহী আদেশের ছুটি’
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা ১০ দিন ছুটি দিতে যে পন্থা সরকার অবলম্বন করেছে, তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের খোঁজ-খবর কিংবা যাচাই করা হয়নি। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনিতেই ১১ ও ১২ জুন ছুটি থাকবে। ফলে ছুটির দিনে ‘নির্বাহী আদেশের ছুটি’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও প্রতিপালনের নির্দেশনা দিয়ে হাসির খোরাক যুগিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী—দেশের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে ১ জুন। ঈদের ছুটির সঙ্গেই চলবে গ্রীষ্মকালীন অবকাশও। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশের দীর্ঘ এ ছুটি শেষ হবে ১৯ জুন। ২০ জুন থেকে পুনরায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে। সরকারি-বেসরকারি কলেজে অবশ্য শুধুই ঈদুল আজহার ছুটি। তারপরও সেখানে নির্বাহী আদেশের ছুটির প্রয়োজন পড়ছে না। কারণ, শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে ৩ জুন, যা চলবে ১২ জুন পর্যন্ত। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও লম্বা ছুটি থাকবে। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে ৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত। ফলে প্রাথমিকেও নির্বাহী আদেশের ছুটি প্রযোজ্য হচ্ছে না।
তিনটি সরকারি আলিয়া মাদরাসা এবং বেসরকরি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদরাসাগুলোতেও নির্বাহী আদেশের ছুটির প্রয়োজন পড়ছে না। মাদরাসার শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশের সমন্বিত ছুটি শুরু হবে ১ জুন, যা চলবে ২৫ জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ, ১১ ও ১২ জুন আগে থেকেই মাদরাসা ছুটি রয়েছে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থাৎ, প্রি-ভোকেশনাল, প্রি-ভোকেশনাল (মাদরাসা) ও এসএসসি (ভোকেশনাল), দাখিল (ভোকেশনাল) পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানেও ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি একসঙ্গে পড়েছে। শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী- ১ জুন থেকে ছুটি শুরু হয়ে ১৯ জুন পর্যন্ত টানা ছুটি থাকবে। ফলে নির্বাহী আদেশে ১১-১২ জুনের ছুটি কারিগরির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয়। ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ভ্যাকেশনাল (অবকাশকালীন) চাকরি করেন। সেজন্য আমলা বা অন্য সরকারি কর্মচারীদের চেয়ে শিক্ষকরা অনেক আর্থিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন। সেখানে অন্য সব দপ্তরের মতো ছুটি মিলিয়ে দেওয়াটা অযৌক্তিক।’